background image
চট্টগাম জেলার মীরসরাই উপজেলার এক অনুপম নৈসর্গিক পরিবেশে ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অত্র বিদ্যালয়টি  । পরে ২০০৯ সালে কলেজে উন্নীত করে এ প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ।

চট্টগাম জেলার মীরসরাই উপজেলার এক অনুপম নৈসর্গিক পরিবেশে ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অত্র বিদ্যালয়টি । পরে ২০০৯ সালে কলেজে উন্নীত করে এ প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানটির শুরুর দিকের আরও অনেক কথা অব্যক্ত রয়েছে যা আমাদেরকে সুদূর অতীতকে স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রথম সূত্রপাত হয় ১৯৩০ সালে মহাজনহাট বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত নন্দী বাড়ির পুকুরের উত্তর পাড়ে একটি জীর্ণ টিনশেড ঘরের মাধ্যমে। ৪র্থ শ্রেণি দিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রথম উদ্যেক্তা ছিলেন বাবু যতীন্দ্র নন্দী। পরে ১৯৪০ সালে একে হাইস্কুলে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং বর্তমানে এ স্থানে একে স্থানান্তরিত করা হয় । পর্যায়ক্রমে এতে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণি চালু করা হয় এবং ১৯৫২-৫৩ সনে একে জুনিয়র হাই স্কুলে রূপান্তরিত করার পক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৫৭-৫৮ সনের দিকে প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন পরিচালনা কমিটির সাথে মীরসরাইয়ের জন নন্দিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি এবং মন্ত্রী মহোদয়ের মরহুম পিতা বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী জনাব এস. রহমান সম্পৃক্ত হন। এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বাবু ডাঃ হরণ দত্ত। এরপর ১৫/০৬/১৯৫৮ ইং তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় Fazalur Rahaman Institute. ২৮/০৬/১৯৫৮ ইং তারিখের দিকে তৎকালীন S.D.I সাহেব স্কুল পরিদর্শন করেন এবং অনুকূল সুপারিশপত্র প্রদান করেন (Memo No. 5100/A,
Dated the 7th July 1959) । ১৯৫৯ সনে এস. রহমান সাহেব একে হাইস্কুলে উন্নীত করার আন্তরিক প্রচেষ্ঠা চালান। কিন্তু পার্শ্ববর্তী জোরারগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এর দূরত্ব ২.৫ মাইলের কম দেখিয়ে হাইস্কুল করার বিষয়ে তীব্র বিরোধিতা করা হয়। এ সময় জনাব এস.রহমান মহোদয়ের এক শিক্ষা বিভাগীয় বন্ধুর পরামর্শে Fazalur Rahaman High School এর পরিবর্তে Fazalur Rahaman Institute নামকরণ করে এতে উচ্চ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা হয়। সাধারণ পাঠ্যসূচির সাথে সাথে এখানে তখন চালু করা হয়েছিল Black Smithy,
Carpentry, Textile ইত্যাদি এবং ছাত্ররা ক্লাশের শেষে কাঠের কাজ, বেতের কাজ, কাপড় বুনার কাজ ইত্যাদি শিখত।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তি যুদ্ধ হয়ে যাবার পর সাময়িকভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মরহুম এস.রহমান সাহেবের সুযোগ্য সন্তান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রাপ্তির পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির অতি দ্রুত উন্নতি হতে থাকে। ২০০০ সনে বিদেশি, সরকারি, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অনুদানের মাধ্যমে একে একটি সুদৃশ্য ৪ তলা ভবনে রূপান্তরিত করা হয়। ছাত্র হোষ্টেল, বিজ্ঞানাগার, দ্বি-তল বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় ইত্যাদি সব করা হয় অতি দ্রুত গতিতে। বর্তমান প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে এস.রহমান ট্রাষ্ট বোর্ডের মাধ্যমে এবং উক্ত ট্রাষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাননীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সফল মন্ত্রী জনাব ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি মহোদয়। ২০০০ সনে হাইস্কুলের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উৎসব মহাসমারোহে উদ্যাপন করা হয় এবং দেশের কয়েকজন মন্ত্রী মহোদয় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং এ অনুষ্ঠানে উক্ত বিদ্যালয়টিকে কলেজে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০০৯ সনের জুলাই থেকে মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের যাত্রা শুরু হয়। উক্ত কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।

২০১১ সালের প্রথম এইচ এসসি পরীক্ষায় এ কলেজের পরীক্ষর্থীরা অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করে। এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠির সন্তানদের উচ্চ শিক্ষর সুযোগ প্রদান করার এক অনন্য নজির স্থাপন করেন জনাব ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি মহোদয়। এর ধারাবাহিকতায় অধ্যক্ষ মহোদয়ের উদ্যোগে উচ্চ শিক্ষা প্রসারে কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি সহায়িকা হিসেবে “এডমিশন এইড” নামে একটি কোচিং পরিচালিত হচ্ছে। যেখান থেকে প্রতি বছর উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে। পরবর্তীতে তাদের জন্য এস. রহমান ট্রাস্ট থেকে বৃত্তি প্রদান করা হয়। বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহোদয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কলেজের চলমান উন্নয়নমূলক কাজে গতির সঞ্চার হয়। তাঁর দূরদর্শী, সৃজনশীল, ঐকান্তিক ও নিরলস কর্ম প্রচেষ্টার ফলে কলেজটি ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম জেলার একটি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বর্তমানে কলেজটিতে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও সমৃদ্ধ পাঠাগার, বিজ্ঞানগার ও ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। এছাড়াও রয়েছে মুজিব কর্ণার, ছাত্রাবাস, ক্যান্টিন সুবিধা, নিজস্ব পরিবহন, বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, ইংলিশ ক্লাব, মুক্ত মঞ্চ, সাহিত্য মঞ্চ, বিএনসিসি, রোবার স্কাউট এবং গালর্স গাইডের সুবিধা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ ও আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ লাভ করেছে। আধুনিক বিশ্বের সাথে সংগতি রেখে নতুন নতুন শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহন করার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।

 

সম্মানিত পরিচালনা পর্ষদ

photo

Eng. Mosharraf Hossain

President